বেরোবিতে নেই ছাত্র সংসদ তবুও ফি আদায়

বেরোবিতে নেই ছাত্র সংসদ তবুও ফি আদায়

Generic placeholder image
  Ashfak

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি)ছাত্র সংসদ নেই তবুও চলছে ছাত্র সংসদের নামে ফি আদায়। এখন পর্যন্ত ছাত্র সংসদ গঠিতও হয়নি। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ছাত্র সংসদ পরিচালনা ও উন্নয়নের নামে নিয়মিত ফি (চাঁদা) আদায় করছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়,বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন ছাত্র সংসদ নেই। বিশ্ববিদ্যালয়  আইনে ২০০৯ সালের সংসদীয় বিধান অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের বিধান রাখা হয়নি। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বে-আইনিভাবে ছাত্র সংসদ বাবদ ফি আদায় করছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।তবে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায়কৃত অর্ধ কোটিরও বেশি পরিমাণ টাকা কোথায়, কিভাবে কোন খাতে ব্যয় হচ্ছে সে হিসেব নেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর ২০০৮-২০০৯ শিক্ষাবর্ষ থেকে স্নাতকে ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের থেকে ২০০ টাকা এবং স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ১০০ টাকা করে ছাত্র সংসদ বাবদ ফি আদায় করা হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয় একাডেমিক সূত্র থেকে জানা যায়,বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন পর্যন্ত স্নাতক পর্যায়ে প্রায় ১৭ হাজার শিক্ষার্থীরও বেশি ভর্তি হয়েছে যার মধ্যে অধিকাংশই এই বিশ্ববিদ্যালয়টি থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছে। সে হিসেবে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায়কৃত ফি’র পরিমাণ দাঁড়ায় ৫০ লাখেরও অধিক।
বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রিয়াশীল বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ না থাকার পরও চাঁদা আদায় করে প্রশাসন তাদের ইচ্ছা মাফিক ব্যয় করছেন।কিভাবে, কোন খাতে ব্যয় করছেন সে বিষয়ে জানতে চাইলে কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ে কবে নাগাদ ছাত্র সংসদ গঠিত হবে এসব জানতে চাইলে কোন সদুত্তরও পাওয়া যায়না।
একাধিক শিক্ষার্থী বলেন,ছাত্র সংসদের নামে আমাদের থেকে যে টাকা আদায় করেন সেটা আমাদের শিক্ষার্থীদের কোন কাজে লাগে সেটা আজও জানিনা।ছাত্র সংসদ না থাকার পরে লিডারশীপ ক্ষমতা বৃদ্ধি করার সুযোগটাও সেইভাবে পাচ্ছি না।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়,যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয় আইনে ছাত্র সংসদের বিধান না থাকার কারণে নির্বাচন করতে হলে প্রথমে ছাত্র সংসদ আইনের খসড়া একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেটে পাস করে তা অনুমোদনের জন্য জাতীয় সংসদে পাঠাতে হবে। বিধানটি বিশ্ববিদ্যালয় আইনে সংযুক্ত হলে তারপরেই ছাত্র সংসদ নির্বাচন আয়োজন সম্ভব হবে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, দ্রুত ছাত্র সংসদের কাজ করা হোক না হয় সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিকট চাঁদা আদায় বন্ধ করা হোক।
ছাত্র সংসদ বাবদ অর্ধকোটি টাকা কেনো আদায় করা হয়,কিভাবে এবং কোন খাতে ব্যয় করা হচ্ছে সে বিষয়ে জানতে চাইলে সঠিকভাবে কোনো তথ্যই দিতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থ ও হিসাব দপ্তরের পরিচালক  অধ্যাপক ড. আর এম হাফিজুর রহমান বলেন,এ বিষয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই ;উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে ভালো জানেন।আমার উপরে ট্রেজারার, ভিসি রয়েছেন উনারা ভালো বলতে পারবেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড.মজিব উদ্দিন আহমেদ বলেন,যেহেতু টাকাটা ভর্তির সময়ে নেয়া হয় এবং ভর্তি আমাদের সেক্টর থেকে হয়না তাই এই বিষয়ে জানিনা। তাই এ বিষয়ে আমি বলতে পারব না।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলমগীর চৌধুরী বলেন,যেহেতু টাকাটা ছাত্র সংসদ বাবদ উঠানো হয়, তাহলে এই টাকা অন্য খাতে ব্যয় করার সুযোগ নেই।হয়তো টাকাটা ওইভাবেই রয়ে গেছে।আমি তো এই বিষয়ে তেমন কিছু জানিনা, অর্থ বিভাগ এ বিষয়ে ভালো বলতে পারবে।তবে আমি মনে করি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ থাকা উচিত।তাতে করে তাদের লিডারশীপ ক্ষমতাটা বৃদ্ধি পাবে।
আশিক,বেরোবি প্রতিনিধি

মন্তব্য করুন হিসাবে:

মন্তব্য করুন (0)