গোলাপি বলে ঐতিহাসিক টেস্টের দ্বিতীয় দিনটি যেমন নিজের করে নিয়েছেন ভারতীয় অধিনায়ক। তেমনি একাই লড়াই করে ম্যাচে প্রাণ ফিরিয়েছেন সাবেক অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম।
মান বাঁচিয়েছেন প্রিয় দলের। স্বাগতিক তিন পেসার ইশান্ত-যাদব-সামির সাঁড়াশি আক্রমণে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা যখন আসা-যাওয়ার মিছিলে শামিল, তখন বাউন্স, গতি ও সুইংকে সামলে বীরের মতো ব্যাটিং করেছেন মুশফিক।
গোলাপি বলে টেস্ট আয়োজন নিয়ে উৎসবের নগরীতে পরিণত হয়েছে ৪০০ বছরের পুরনো কলকাতা। উচ্ছ্বাসের মঞ্চ হয়েছে ইডেন। এশিয়ার সবচেয়ে পুরনো ও ভারতের সবচেয়ে অভিজাত স্টেডিয়ামকে গতকাল গোলাপি রঙে রাঙিয়েছেন কোহলি।
অপরিচিত গোলাপি বলে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরির মঞ্চ হিসেবে বেছে নেন ইডেনকে। এবাদত, রাহী ও আল-আমিনদের সুইংয়ের বিপক্ষে খেলতে নেমে ক্যারিয়ারের ২৭ নম্বর এবং কলকাতায় টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরি করেন কোহলি।
ব্যক্তিগত ১৩৬ রানে ফ্লিক খেলেন এবাদতের বলে। বলটি ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগ দিয়ে বাইরে বেরিয়ে যাওয়ার মুহূর্তে শূন্যে ঝাঁপিয়ে ক্যাচটি নেন তাইজুল। ওই ক্যাচের পর ম্যাচে ফিরেছে টাইগাররা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দিনটি নিজেদের করে নিতে পারেনি বাংলাদেশ।
বিকালের গোধুলী আলোয় এবাদত-রাহী-আল আমিন ত্রয় ৭ ওভারের ছোট্ট স্পেলে ভারতে আটকে রাখে ৩৪৭ রানে। কোহলি বাহিনী ইনিংস ঘোষণার পর বাংলাদেশ ব্যাটিংয়ে নামে।
২৪১ রানে পিছিয়ে থেকে ব্যাটিংয়ে নেমে ফের ইশান্তের তোপে পড়ে বেসামাল হয়ে পড়ে টাইগাররা।
আরও পড়ুনঃ রানের পাহাড় টপকাতে পারবে টাইগাররা
১৩ রানে খুইয়ে বসে ৪ উইকেট। ব্যাটিংয়ের এমন বেহাল অবস্থায় মাহমুদুল্লাহকে সঙ্গী করে ঘুরে দাঁড়ান মুশফিক। দুজনে পঞ্চম উইকেট জুটিতে যখন থিতু গেড়ে বসেন, তখনই দুর্ভাগ্য মাহমুদুল্লাহর।
দ্রুত রান নিতে গিয়ে হ্যামস্ট্রিংয়ে টান পরে টি-২০ অধিনায়কের। স্কোর বোর্ডে ৬৯ রান করেন দুই ক্রিকেটার। মাহমুদুল্লাহর নামের পাশে তখন ৪১ বলে ৩৯ রান। টি-২০ অধিনায়কের বিদায়ের পর মুশফিক স্কোর বোর্ডে আরও ৭০ রান যোগ করেন দুই ‘কানকুশান সাব’ মেহেদি মিরাজ ও তাইজুলকে নিয়ে।
দুজনকে নিয়ে তিন ভারতীয় পেসারের ১৪০-১৪৫ কিলোমিটার গতির বল সামলেছেন। বাউন্সারে মচকেছেন, কিন্তু আত্মসমর্পণ করেননি। ক্যারিয়ারের ২১ নম্বর হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন মুশফিক।
লড়াকু ইনিংসটি খেলতে বল খেলেছেন ৭০টি। বাউন্ডারি মেরেছেন ১০টি। ভারতের মাটিতে টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের সেরা পারফরমার মুশফিক। ২০১৭ হায়দরাবাদে সেঞ্চুরি করেছিলেন মুশফিক। এবার ইন্দোরে প্রথম ইনিংসে ৪৩ রানের পর দ্বিতীয় ইনিসে করেন ৬৪ রান। ইনিংস হার এড়াতে টাইগারদের প্রয়োজন ৮৯ রান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
(৩য় দিন)
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস ১০৬।
দ্বিতীয় ইনিংস ১৯৫।
ভারত ১ম ইনিংস ৩৪৭/৯(ডি.)।