প্রায় ৯ বছর পর ৩১ মে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে হালুয়াঘাট উপজেলা আওয়ামীলীগের ত্রি- বার্ষিক সম্মেলন। এ সম্মেলনকে কেন্দ্র স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে শুরু হয়েছে মৃদু উত্তেজনা, উত্তাপ।
দলটির তৃনমূল নেতা কর্মীদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা দেখা যাচ্ছে। সম্মেলনকে কেন্দ্র করে স্থানীয় আ. লীগ রাজনীতিতে চলছে সম্ভাব্য পদ প্রার্থীদের পক্ষে মিটিং মিছিল। সেই সাথে স্থানীয় কাউন্সিলদের সাথে নেতাকর্মীদের যোগাযোগ তো আছেই। এবারের সম্মেলনে সভাপতি ও সম্পাদক পদে ভোট হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন অনেকেই। এ পর্যন্ত এই দুই পদে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে, তাদের মধ্যে সভাপতি পদে দুই জন, সম্পাদক পদে তিন জনের নাম উঠে আসছে। সভাপতি পদে প্রার্থী হিসেবে নাম শোনা যাচ্ছে, হালুয়াঘাট ধোবাউড়া থেকে দুই বারের সংসদ সদস্য নির্বাচিত এবং কেন্দ্রীয় যুবলীগের সহ- সভাপতি, যিনি চলমান কমিটির সভাপতি জুয়েল আরেং এমপি। সাবেক সাংস্কৃতি ও সমাজকল্যান প্রতিমন্ত্রী এড. প্রমোদ মানকিনের মৃত্যুর পর তিনি উপজেলা শাখার প্রথম সদস্য হন। অন্যজন হচ্ছেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদকারী তৎকালীন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি এবং বর্তমান কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি, সেই সাথে বিগত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. কবিরুল ইসলাম বেগ এর নাম। এদিকে সাধারণ সম্পাদক হিসাবে যাদের নাম দলীয় সূত্রে শোনা যাচ্ছে, তাদের মধ্যে বর্তমান কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক অধ্যক্ষ মো. আবদুর রশিদ। বর্তমান কমিটির যুগ্ম সম্পাদক এবং সাবেক ছাত্রলীগ যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মোরশেদ আনোয়ার খোকন, বর্তমান কমিটির যুগ্ম সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রলীগ সম্পাদক হালুয়াঘাটে প্রথম নির্বাচিত মেয়র মো. খায়রুল আলম ভুঞা, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. বজলুর রহমান। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অত্র অঞ্চলের অধিকাংশ নেতাকর্মীরা এবারের সম্মেলনে তারুণ্যদের সুযোগ দিতে চায়। জানা যায়, সর্বশেষ ২০১৩ সালে সম্মেলনে তৎকালীন এমপি ও প্রতিমন্ত্রী এড. প্রমোদ মানকিন সভাপতি এবং অধ্যক্ষ খুরশীদ আলম ভুঞা সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন। এরপর আর কোন সম্মেলন হয়নি। ঐ কমিটির সভাপতি এবং সম্পাদক দুই জনই প্রয়াত । সূত্রে আরো জানা যায়, অনেকেই গুরুত্বপূর্ণ পদে আসিন থাকার পরও দলীয় গুরুত্বপূর্ন কাজে তাদের দেখা যায় না সচরাচর বরং দলীয় গুরুত্বপূর্ণ পদে আসিন থাকা সত্বেও দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষ অবস্থান নিয়েছেন অধিকাংশ সময়। তাই এবার তৃণমূল পর্যায়ে দাবী উঠছে, এমন নেতাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেয়ার। সর্বক্ষেত্রে বঞ্চনার শিকার দলের প্রকৃত ত্যাগী ও যোগ্য পরীক্ষিত তারুণ্য নির্ভর কমিটি চায় হালুয়াঘাট উপজেলাবাসী। যাদের নেতৃত্ব দল শক্তিশালী আগামী জাতীয় নির্বাচনসহ উপজেলা ও পৌরসভার নির্বাচনে দলীয় একক প্রার্থী বাঁচাই এবং তিনটি পদই ধরে রাখা যায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আওয়ামীলীগ নেতা বলেন, এই সম্মেলনে যদি ভূল নেতৃত্ব আসে, তবে আগামী নির্বাচনে এবং প্রতিটি জায়গাতে পরাজয় স্বীকার করতে হবে আওয়ামীলীগ নেতাকর্মী এবং প্রার্থীকে। সেদিক বিবেচনা করে সঠিক নেতৃত্বকে মূল্যায়ন করা হবে এবং যোগ্য নেতৃত্ব আসবে এমনটাই প্রত্যাশা সকলের। এ ব্যাপাের হালুয়াঘাট আর্দশ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল ওয়াহাব বলেন, দলীয় গঠনতন্ত্রের মূলনীতিকে অনুসরণ করে বর্তমান এমপির নেতৃত্ব তৃনমুল নেতাকর্মীদের আশার প্রতিফলন ঘটবে এটাই প্রত্যাশা আমাদের। মেয়র খায়রুল আলম ভুঞা বলেন, ৯ বছর পর সম্মেলন হচ্ছে আমি খুবই আনন্দিত। এই সম্মেলনের মাধ্যমে সঠিক এবং তারুন্যদীপ্ত নেতৃত্ব বেরিয়ে আসুক এ প্রত্যাশা করছি। সেই সাথে দলের দুঃসময়ের কান্ডারী এবং ত্যাগী নেতা কর্মীদের মূল্যায়ন হোক এ প্রত্যাশা তো রয়েছেই। এ দিকে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী দুই জন অধ্যক্ষ আবদুর রশিদ এবং মোরশেদ আনোয়ার খোকন বলেন, নেতা কর্মীদের সুযোগ দিলে তারা তাদের কেই খুঁজে নিবে। উপজেলা চেয়ারম্যান মাহমুদুল হক সায়েম বলেন, ৯ বছর পর উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন হতে যাচ্ছে, সেটা অব্যশই সঠিক ভাবে কাজে লাগাতে হবে। সম্মেলনকে উৎসবমুখর করার জন্য সর্বাত্মক সহযোগীতা করা হবে এবং প্রত্যাশা অনুযায়ী নেতৃত্ব বাঁচাই করা হবে। আগামী দিনে সঠিক ও সুন্দর পরিবেশে সম্মেলন সফল হবে, এমনটাই প্রত্যাশা আমাদের সকলের।
সমীর সরকার, হালুয়াঘাট প্রতিনিধি