রাত তখন আনুমানিক ১টা। টাঙ্গাইল শহরের একটি বাড়ির গেটে এসে ৩-৪ ব্যক্তি সিকিউরিটি গার্ডকে ডাকাডাকি করতে থাকেন। দরজার সামনে এসে গার্ড দেখতে পান ৪ জন দাঁড়িয়ে আছেন।
২ জন মাস্ক, গ্লাভস পরা এবং দুজন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পোশাক পরা। ভেতর থেকে গার্ড তাদের পরিচয় জানতে চান।
জবাবে তারা বলেন, হাসপাতাল থেকে এসেছেন। কারণ তাদের কাছে তথ্য রয়েছে যে, এ বিল্ডিংয়ে করোনা আক্রান্ত রোগী রয়েছে। তাকে নিয়ে যেতেই এসেছেন তারা।
সিকিউরিটি গার্ড কোনোভাবেই দরজা খুলবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন। কিন্তু তারা ভয় দেখিয়ে দ্রুত গেট খোলার জন্য তাগিদ দিয়ে যাচ্ছিলেন।
গার্ড তাদের পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দেন স্বয়ং বাড়িওয়ালা ওপর থেকে এসে গেট খোলার জন্য তাকে বললেও তিনি কিছুতেই গেট খুলে দেবেন না।
তাদের যদি সত্যি সত্যিই করোনা রোগী নিয়ে যেতে হয় তবে সকাল পর্যন্ত বাইরে অপেক্ষা করতে হবে। কোনোভাবেই গার্ড গেট খুলে না দেওয়ায় তারা তাকে যাচ্ছেতাই ভাষায় গালাগাল করে চলে যায় এবং শাসিয়ে যায় যে, সকালে এসে তাকে দেখে নেবেন।
কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, সকালে কেউ সে বাড়িতে করোনা রোগী নিতে আসেনি। কারণ সে বাড়িতে প্রকৃতপক্ষে কোনো করোনা রোগী নেই। বাড়ির মালিক বুঝতে পারেন, তারা প্রকৃতপক্ষে ছদ্মবেশী ডাকাত ছিল।
শুধু টাঙ্গাইল নয়, এমন ঘটনা এখন রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে। ঢাকার গুলশান ও ধানমন্ডি এলাকায়ও মধ্যরাতে বাসাবাড়ির সামনে ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সরঞ্জাম (পিপিই), মাস্ক ও গ্লাভস পরা লোকজনকে ঘুরতে দেখা যায়।
টাঙ্গাইলের মতো ঘটনা এসব এলাকায়ও ঘটেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে নতুন এক আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে সাধারণ মানুষের মধ্যে।
আরও পড়ুনঃ প্রবাসীর স্ত্রীর গোসলের ভিডিও করে ফেসবুকে
এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি বাসায় চুরি ও দস্যুতার ঘটনা ঘটেছে। ওষুধের দোকানেও ঘটেছে ডাকাতি। তারাও মাস্ক পরে ঢুকেছিল ডাকাতি করতে। পুলিশ এমন একটি চক্রকে গ্রেফতারও করেছে।
এ বিষয়ে পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি-মিডিয়া) মোহাম্মদ সোহেল রানা বলেন, এ ধরনের সন্দেহভাজনদের দেখলে অবশ্যই ৯৯৯-এ কল করে অথবা থানায় কল করে পুলিশের সহযোগিতা নিতে হবে। পুলিশকে জানিয়েই যা করার করতে হবে।