৭ বছরের এক শিশুকে পালাক্রমে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগে এক কিশোরকে (১৫) আটক করেছে র্যাব। রবিবার রাত আড়াইটার দিকে টঙ্গী পূর্ব থানার রেল স্টেশন এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়।
সে টঙ্গীর বেলতলা মসজিদ রোডের কাউছার মিয়ার বাড়ির ভাড়াটিয়া। তার বাবা ওমর ফারুক। ধর্ষণে জড়িত সুফিয়ান নামের একজনকে আটকের চেষ্টা চলছে।
র্যাব-১ এর গাজীপুরের কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল মামুন গতকাল তার কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, গত ১৬ মে টঙ্গী পূর্ব থানার মধুমিতা রেলগেট এলাকার একটি আবর্জনার স্তূপ থেকে বেলতলা এলাকার ভাড়াটিয়া মামুন মিয়ার মেয়ে মাদ্রাসা পড়ুয়া ছাত্রী চাঁদনীর (৭) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
লাশের গলায় ও দুই পায়ে আঘাতের চিহ্নসহ ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়। এ বিষয়ে চাঁদনীর বাবা টঙ্গী পূর্ব থানায় মামলা করেন। র্যাব মামলাটির ছায়া তদন্ত শুরু করে।
র্যাবের তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, শিশু গণধর্ষণের ঘটনায় নিলয়কে আটক করার পর জানা যায়, সুফিয়ান (২১) নামে একজন এ ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত। ভবঘুরের সঙ্গে মিলে শিশু চাঁদনীকে ধর্ষণ ও হত্যায় অংশ নেয় সে।
শিশুটি অজ্ঞান হয়ে গেলেও পর পর ৩/৪ বার ধর্ষণ করে সুফিয়ান। পরে নিলয়ও শিশুটিকে ধর্ষণ করে। সুফিয়ান সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে তারা জানতে পারে, সে তার প্রতিবেশীর শিশু কন্যা মিম (৭) ও জান্নাতকে (৮) চুড়ি ও চকলেট কিনে দিয়ে ৪/৫ বার করে ধর্ষণ করেছে।
এই ঘটনা সে নিলয়কে বলেছে এবং র্যাবের গোয়েন্দারাও ঘটনার সত্যতা যাচাই করে নিশ্চিত হয়েছে। সুফিয়ান একজন সিরিয়াল শিশু ধর্ষক। সে যে কোনো শিশু কন্যাকে দেখলে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে এবং মনে মনে হয়ত ধর্ষণের ছক আঁকে।
র্যাব-১ জানায়, আটক কিশোর চুরি, ছিনতাইকারী দলের সক্রিয় সদস্য। সে এবং তার সহযোগীরা মিলে টঙ্গী রেলস্টেশন এবং তার আশপাশ এলাকায় নিয়মিত চুরি ছিনতাই করে।
জিজ্ঞাসাবাদে সে জানিয়েছে, গত ১৫ মে বিকালে চাঁদনী মাঠে খেলাধুলা করতে এলে ওই কিশোর ও তার এক সহযোগী তার সঙ্গে ভাব জমানোর চেষ্টা করে। গাছ থেকে কৃষ্ণচূড়া ফুল পেরে দেয়।
আরও পড়ুনঃ মাকে বেধড়ক পেটানো সেই সন্তান গ্রেফতার
চাঁদনীর বাসায় ফেরার সময় পথে বৃষ্টি শুরু হয়। আশেপাশে লোকজনও কম ছিল। এই সুযোগে ওই দুই কিশোর চকলেট কিনে দেওয়ার কথা বলে চাঁদনীকে পার্শ্ববর্তী মধুমিতা রেলগেট এলাকায় নিয়ে যায়।
এরপর তারা মুখ বেঁধে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। শিশুটি এক পর্যায়ে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। ধর্ষকরা পরে নামপরিচয় প্রকাশ হয়ে যাওয়ার ভয়ে ওই অবস্থাতেই চাঁদনীকে তারা শ্বাসরোধ করে হত্যা করে পাশেই একটি আবর্জনার স্তূপে মৃতদেহ ফেলে পালিয়ে যায়।
সুফিয়ানকে আটক করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন র্যাব কর্মকর্তারা।