স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে চাঁদা দাবির অভিযোগ,এলাকায় তোলপাড়

Generic placeholder image
  Ashfak

নড়াইলের লোহাগড়ায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস-২০২৪ উদযাপন উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসনের বিরুদ্ধে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে ব্যাপক চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে। চাঁদাবাজীর ঘটনা ফাঁস হবার পর এলাকায় তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়েছে। দিবসটি পালনে সরকারী বরাদ্দকৃত টাকার পরিমাণ প্রয়োজনের তুলনায় কম এই অজুহাতে চলছে চাঁদাবাজী। অফিস সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস-২০২৪ উদযাপন উপলক্ষে লোহাগড়ার সদ্য বিদায়ী ইউএনও অনিমেষ বিশ^াস নানা কর্মসূচী সম্বলিত দাওয়াতপত্র(কার্ড) ছাপান। যে কাডে ইউএনওর নামও রয়েছে। জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক দলের সভাপতি-সম্পাদক, শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান প্রধান, ক্লাব কর্মকর্তা, সরকারী অফিসের কর্মকর্তাসহ নানা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ওই দাওয়াতপত্র বা কার্ড ইউএনও অফিসের পিয়নসহ অন্য দুজন কর্মচারীকে দিয়ে বিতরণ করা হয়। ইউএনও অফিসের অফিস সহকারী মোঃ শরিফুল ইসলাম লক্ষীপাশা বাজার এলাকার বিভিন্ন হোটেল-রেস্টুরেন্ট, মিষ্টির দোকানসহ উপজেলার বিভিন্ন স্থানের তেলপাম্প, ইটভাটায় দাওয়াতপত্র কার্ড পৌঁছে দেন। দাওয়াত কার্ড পৌঁছে দেবার সাথে সাথে তাদের জানিয়ে দেয়া হয় ৫ হাজার টাকা দিতে হবে। কোন প্রকার রশিদ ছাড়াই ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নেয়া হয়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, লোহাগড়া উপজেলা সদরের লক্ষীপাশা চৌরাস্তা বাজারে পলাশ হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট, রোজ ভ্যালী হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট, মোল্যা সুইটস, অরুপ মিষ্টান্ন ভান্ডার, সুস্বাদু হোটেল, রউফ মিষ্টান্ন ভান্ডার, মুসলিম সুইটস সহ বিভিন্ন দোকানে দাওয়াতপত্র কার্ড অফিস স্ট্যাফ শরিফুল ইসলাম পৌঁছে দিয়ে ৫ হাজার টাকা দাবি করেছেন। এভাবেই তেল পাম্প, ইটভাটাসহ লোহাগড়া উপজেলার বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চাঁদা দাবী করা হয়েছে বলে অভিযোগ।

সুস্বাদু হোটেলের মালিক সনাতন, রউফ মিষ্টান্ন ভান্ডারের মালিক নিজাম শেখ, মোল্যা সুইটসের মালিক মোঃ মনির আহম্মেদ, মুসলিম সুইটস এর মালিক মোঃ মফিদুল ইসলাম, অরুপ মিষ্টান্ন ভান্ডারের মালিক গৌরচন্দ্র, পলাশ হোটেলের ম্যানেজার আব্দুর রাজ্জাক, রোজ ভ্যালী হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার ইমরান হোসেনসহ অন্যরা জানায়, রোজার মাস, বেচাকেনা এমনিতেই কম। তারপর আবার ইউএনও অফিসের অফিস সহকারী মোঃ শরিফুল ইসলাম মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস-২০২৪ উদযাপন উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসনের ইস্যুকৃত দাওয়াতপত্র কার্ড দিয়ে বৃহস্পতিবার(২১ মার্চ) ৫ হাজার টাকা দাবি করে গেছেন। অবশ্য পরের দিন শুক্রবার(২২ মার্চ) সকালে আবার এসে ১৫শ টাকা দিতে হবে জানিয়েছেন। জানা গেছে, অনেক ব্যবসায়ী ইতোমধ্যে চাঁদার টাকা দিয়ে দেছেন। অনেকে দেবার প্রস্তুুতি নিয়েছেন। ক্ষোভ প্রকাশ করে ব্যবসায়ীরা বলেন, আমরা সঠিক নিয়মে ব্যবসা করছি। কিন্তু টাকা না দিলেতো ভ্রাম্যমাণ আদালত দিয়ে অযথা জরিমানা নেয়া হবে। হয়রানির ভয়তে টাকা দেই।

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একজন তেলপাম্প মালিক জানান, আমি ১ হাজার টাকা দিয়েছি। লক্ষীপাশা ও লোহাগড়া বাজারে ব্যবসায়ীর সংখ্যা প্রায় ৩ হাজার। লোহাগড়া বাজার বণিক সমিতির সভাপতি ইবাদৎ শিকদার এ বিষয়ে বলেন, চিঠি দিয়ে টাকা নেয়ার নিয়ম নাই। যদি ইউএনও অফিসের কেউ এটা করে থাকে তবে নিয়ম বর্হিঃভূত করেছে। দোকানদারদের বলে দেবো কেউ জোরপূর্বক টাকা নিতে আসলে যেন না দেয়া হয়। এ বিষয়ে অফিস সহকারী মোঃ শরিফুল ইসলাম জানান, প্রতি বছরই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে দাওয়াতপত্র কার্ড দেয়া হয়। কোন দোকানে বাধ্যতামূলক টাকা দেবার কথা বলা হয়নি। ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্যার বিষয়টি অবগত আছেন। ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার আফরিন জাহান এ বিষয়ে বলেন, মহান স্বাধীনতা দিবসের চিঠির ব্যাপারে আমার জানা নেই। এরকম কোন নির্দেশনাও দেয়া হয়নি। আমি অফিস সহকারীর সাথে কথা বলে দেখছি।

ইকবাল হাসান//নড়াইল)প্রতিনিধি

মন্তব্য করুন হিসাবে:

মন্তব্য করুন (0)