লালমনি এক্সপ্রেসে বেড়ে যাচ্ছে যাত্রীর ভোগান্তি 

Generic placeholder image
  Ashfak

ট্রেনের নাম লালমনি এক্সপ্রেস। চলে ঢাকা-টু-লালমনিরহাট। বাংলাদেশের রেলপথের সর্বাধিক দূরত্বে ৪৪৫ কিলোমিটার দূরত্বে চলাচলকারী এ ট্রেন শুরু থেকেই অবহেলিত। তারপরেও এ ট্রেনেযাত্রীর কমতি নেই।
সপ্তাহে ৬ দিন চলাচলকারী এ ট্রেনটির বেশির ভাগ বগিতেই জ্বলছে না বাতি। ভেতরে বিদঘুটে অন্ধকার। পাখাগুলো নষ্ট হওয়ায় তীব্র গরমে যাত্রীদের বসে থাকা দায়। 

দুর্গন্ধে থাকা কঠিন। অপরিচ্ছন্ন-নোংরা পরিবেশ তো আছেই। আসনগুলোর অবস্থাও বেহাল। কোনো কোনো আসন ছিঁড়ে বেরিয়ে গেছে নারিকেলের ছোবড়া। দৈন্যদশার এ চিত্র লালমনিরহাট-টু-ঢাকা রুটে। ট্রেনের সেবার মান এত খারাপ যে, স্থানীয়দের কাছে ‘যাত্রী ভোগান্তি লালমনি এক্সপ্রেস’ নামে পরিচিতি পেয়েছে। 

খাবারের মান অত্যন্ত নিম্ন। রান্নাঘর যেন যাত্রীদের ঘুমখানা। সেখানে গরম ও টাটকা কোনো খাবারের বালাই নেই। ট্রেনের ভেতর কোনো কিছু রান্না করা হয় না। বাইরে রান্না করা খাবার এক্সপ্রেসে চালানো হয়। বেশির ভাগ সময় বেকারির খাদ্যদ্রব্য যাত্রীদের কাঁধে চাপানো হয়। পুষ্টিকর খাবার বলতে ২-৩ ধরনের ছাড়া আর কোনো পদ নেই। অথচ ২৪টি পদ খাবার তালিকাভুক্ত করা হলেও তা শুধু কাগজ-কলমে সীমাবদ্ধ। যাত্রীদের খাবারচাহিদা স্টেশনে স্টেশনে নেমে মেটাতে হচ্ছে।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, ২০০৪ সালে ঢাকা থেকে লালমনিরহাট রেলপথে চালু হয় আন্তঃনগর ট্রেন লালমনি এক্সপ্রেস। ঢাকা থেকে রেলপথে লালমনিরহাটের দূরত্ব ৪৪৫ কিলোমিটার। এ বিশাল দূরত্বের পথ পাড়ি দেয়ার জন্য লালমনি এক্সপ্রেসের যাত্রীসেবার মান কমেছে। এরপর আরেক দফা রেলের ভাড়া বাড়ানো হলেও লালমনিরহাট বিভাগে যাত্রীসেবার মান আরো কমেছে। সপ্তাহের প্রথম দিনে নির্ধারিত সময়ে চলা শুরু করেও এটি সঠিক সময়ে পৌঁছতে পারে না।

নিয়মিত যাত্রীরা জানান, এ ট্রেন কখনো সময় মেনে চলে না। প্রয়োজনীয় নিরাপত্তারক্ষী না থাকায় ছিনতাইকারী, মলমপার্টি ও অজ্ঞানপার্টির সদস্যরা সহজেই অপরাধ করে নিরাপদে চলে যায়- এমনকি এ ট্রেনে ধর্ষণের ঘটনাও ঘটেছে বলে অভিযোগ যাত্রীদের। যাত্রীদের ভাষ্য, বিকল্প কোনো ট্রেন না থাকায় নিরুপায় হয়েই তারা এই ট্রেনে ভ্রমণ করেন তারা। ট্রেন কত ঘণ্টা বিলম্বে কয়টায় ছাড়বে, তা জানা যায় না।

সজীব নামে একজন যাত্রী বলেন, আমাদের ক্ষেত্রে যতটা ভাড়া বেড়েছে, ঠিক ততটাই সেবার মান কমেছে। মহব্বত নামে এক যাত্রী আক্ষেপ করে বলেন, হামার (আমরা) কতা (কথা) কাই শোনে বাহে। হামরা তো মফিজ। হামার টেরেনও (ট্রেন) মফিজ। একান নেট করলো, কি করলো না- তাতে কারও কিছ্ছু যাই-আইসে না।’
লালমনিরহাট ডিভিশনাল ট্রাফিক 

সুপারিনটেনডেন্ট (ডিটিএস) আব্দুল আল মামুন বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে ট্রেনে যাত্রীসেবার মান বাড়াতে ডিভিশনাল ট্রাফিক বিভাগ কাজ করা হচ্ছে। তা ছাড়াও প্রতিনিয়ত ট্রেনে যাত্রীসেবা, নিরাপত্তা জোরদার নানান পদক্ষেপ গ্রহণসহ বেশ তৎপর রয়েছে ।
এস.বি-সুজন, লালমনিরহাট প্রতিনিধি

মন্তব্য করুন হিসাবে:

মন্তব্য করুন (0)