ফরিদপুরে জমিজমা বিরোধে ছোট ভাইয়ের নামে থানায় বড় দুই ভাইয়ের মিথ্যা চাঁদাবাজির অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন

Generic placeholder image
  Ashfak

ফরিদপুরে আপন বড় দুই ভাইয়ের কাছে পাওনা টাকা ফেরত চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন মোঃ নাছির উদ্দিন হীরা নামে তাদের ছোট ভাই। পাওনা টাকা ফেরত চাইতে গিয়ে তার নামে ফরিদপুর কোতয়ালী থানায় চাঁদাবাজীর অভিযোগ দেয়া হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন।
আজ রোববার দুপুরে ফরিদপুর শহরের আলীপুরের হাসিবুল হাসান লাবলু সড়ক সংলগ্ন তার নিজ ভবনে সংবাদ সম্মেলনে করেন। তিনি ওই এলাকার মৃত আলহাজ্ব আবু তাহের মিয়ার ছোট পুত্র। সংবাদ সম্মেলনে তিনি ভাইদের হয়রানি থেকে আমি মুক্তি এবং পাওনাকৃত টাকা ফেরত পেতে ফরিদপুর পুলিশ সুপার ও কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সহযোগিতা কামনা করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে নাছির উদ্দিন হীরা বলেন, আমরা ৪ ভাই ও ৭ বোন। মুন্সিগঞ্জ জেলার লৌহজং থানার কুমারভোগ গ্রামে আমাদের অঢেল পৈত্রিক সম্পত্তি ছিল। ওই সম্পত্তি দীর্ঘদিন অন্যের দখলে থাকায় আমি গত চার বছর আগে উদ্ধারের জন্য পরিবারের সকল সদস্যর সাথে কথা বলি এবং তারা সম্মতি দেয় ও যাবতীয় খরচের জন্য সমানভাবে দিতে রাজি হয়। আমি সেই মোতাবেক কুমারভোগ গ্রামে গিয়ে দখলদারদের সাথে কথা বলি এবং তাদের সাথে মিমাংসার মাধ্যমে জমিগুলো ফিরে পাই। তাতে আমার ব্যক্তিগত ৬ শতাংশ জমি তাদের লিখে দেই এবং দীর্ঘদিনের খাজনা পরিশোধ করি। সবমিলিয়ে আমার প্রায় ২২ লক্ষ টাকা খরচ হয়। এরপর সকল ভাইবোনকে জানালে তারা সমানভাবে ২ লক্ষ টাকা করে আমাকে দিতে রাজি হয়। 
তিনি বলেন, ওই জমিগুলো উদ্ধারের পর আমরা সকল ভাইবোন সমানভাবে বিক্রি করে দেই। এরপর আমার ৯ ভাই বোন ২ লক্ষ টাকা করে ১৮ লক্ষ টাকা ফেরত দেয়। কিন্তু আমার বড় ভাই মুশফিকুর রহমান আজিম ও সেজো ভাই মোয়াজ্জেম হোসেন মুক্তা টাকা ফেরত দিতে বিভিন্ন টালবাহানা শুরু করে। তাদের কাছে টাকা চাইতে গেলে আমাকে বিভিন্নভাবে হেনেস্তা করতে শুরু করে। সর্বশেষ গত ১৮ই জানুয়ারি ফরিদপুর কোতয়ালী থানায় আমার নামে মিথ্যা চাঁদাবাজীর অভিযোগ দেন। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। এরপর আমার বাসায় পুলিশও এসেছিল।
তিনি আরও বলেন, ফরিদপুর নিউ মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় একটি দোকান ঘর বিক্রি করে দিয়েছে বড় দুই ভাই। সেখানেও আমার সাথে প্রতারণা করেছে। সেই দোকান বিক্রির টাকা আমাকে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েও আজ পর্যন্ত দেয়নি। তাই আমি ফরিদপুর পুলিশ সুপারের মাধ্যমে দুই ভাইয়ের কাছে পাওনাকৃত চার লক্ষ টাকা ও দোকান বিক্রির টাকা পেতে সহযোগিতা চাচ্ছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মোয়াজ্জেম হোসেন মুক্তা বলেন, আমাদের কাছে সে কোনো টাকা পাবে না। অন্য ভাইবোন তাকে টাকা দিলে আমরা কি করবো। ছোট ভাই হিসেবে সে আমাকে লাঞ্চিত করেছে এবং আমার কাছে আড়াই লক্ষ টাকা দাবি করেছে। অপরদিকে মুশফিকুর রহমান আজিম জানান, টাকা পাইলে টাকা দেব কিন্তু কিসের টাকা পাবে সে বিষয়ে আমাদের প্রমাণাদিসহ টাকার হিসাব দিতে হবে। 
এ বিষয়ে ফরিদপুর কোতয়ালী থানার এস আই আনোয়ার হোসেন জানান, বিষয়টি তাদের জমিজমা সংক্রান্ত হিসাব-নিকাশ নিয়ে পূর্ব বিরোধ। তবে, এটা কোনো চাঁদাবাজি নয়। ছোট ভাই নাছির উদ্দিন বড় দুই ভাইয়ের কাছে জমিজমা নিয়ে টাকা পাবে, সেই টাকা চেয়েছিল। কিন্তু নাছিরের কাছে কোনো প্রমাণাদি না থাকায় দুই ভাই দিতে রাজি হচ্ছে না। এ নিয়ে নিউ মার্কেট এলাকায় তাদের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়েছিল। পরবর্তীতে দুই ভাই থানায় একটি অভিযোগ দেয়।
ফরিদপুর প্রতিনিধি 

মন্তব্য করুন হিসাবে:

মন্তব্য করুন (0)