নৌকার প্রচারণায় ব্যস্ত আওয়ামীলীগ; অন্যান্য প্রার্থীর প্রচার-প্রচারণা মাঠে নেই!

Generic placeholder image
  Ashfak

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আগামী ৭ জানুয়ারি নির্বাচন । আর মাত্র তিন দিন বাকি। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৯৮নং খাগড়াছড়ি আসন থেকে চারজন প্রার্থী অংশ নিচ্ছে। তাদের মধ্যে আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীক নিয়ে তৃতীয়বারের মতো নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা (বর্তমান সাংসদ), তৃণমূল বিএনপি থেকে সোনালী আশ প্রতীক নিয়ে উশ্যেপ্রু মারমা, জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে মিথিলা রোয়াজা, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) আম প্রতীক নিয়ে মো. মোস্তফা। প্রতীক বরাদ্ধের পর থেকে খাগড়াছড়ি আসনের ৯টি উপজেলা ও তিনটি পৌর সভা নিয়ে গঠিত ২৯৮নং আসনের কোথাও না কোথাও প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে সময় পার করছেন প্রার্থী ও তাদের সমর্থকেরা। তবে বিএনপি ও স্থানীয় আঞ্চলিক দল গুলোর শক্ত কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় নির্বাচনী মাঠ সরগরম হয়ে উঠেনি এখনও। এখানকার নির্বাচনী পরিবেশ কিছুটা ব্যতিক্রমি। কেন না মানিকছড়ি উপজেলায় একমাত্র আওয়ামীলীগের মনোনীত নৌকার প্রার্থী ও সমর্থকদের ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা লক্ষ্য করা গেলেও এখন পর্যন্ত অন্য তিন প্রার্থীর কাউকেই প্রত্যন্ত জনপদে তাদের পদচারণার তেমন চিত্র লক্ষ্য করা যায়নি। যার ফলে অন্য প্রার্থীদের এখন পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য সারা না পাওয়ায় নৌকা প্রতীককেই একমাত্র ভরসা মনে করছেন এখানকার সাধারণ ভোটাররা। উপজেলার চারটি ইউনিয়নের একাধিক ভোটারের সাথে কথা বলে জানা যায়, আওয়ামীলীগের নৌকার প্রার্থী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা গত দুই দুই বার সাংসদ নির্বাচিত হওয়ার পর অত্র উপজেলার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক অবকাঠামো, রাস্তা, ব্রীজ কাজের উদ্বোধন, পরিদর্শন, জনসভায় অংশ গ্রহণ করায় বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। সেই সাথে সকলের পরিচিত মূখও বটে। তাছাড়া পার্শবর্তী গুইমারা উপজেলার কৃতি সন্তান সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান তৃণমূল বিএনপির সোনালী আশ প্রতীক নিয়ে এবারের নির্বাচনে অংশ নেয়া উশেপ্রু মারমাও উপজেলা সদরের অনেকের কাছে পরিচিতি মুখ। তবে প্রত্যন্ত এলাকার ভোটারদের কাছে গুইমারা উপজেলা বাদে অন্যান্য উপজেলা তেমন পরিচিত নয়। তাছাড়া বর্তমান সরকারের আমলে উপজেলা প্রত্যন্ত জনপদে ব্যাপক উন্নয়ন হওয়ায় এবং উপজেলা আ.লীগের দক্ষ নেতৃত্বে অত্র উপজেলায় নৌকা প্রতীকের কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার পাল্লাই ভারী। তাই পুনরায় তাকেই নির্বাচিত করবেন বলে জানিয়েছেন একাধিক ভোটার। তাছাড়া যারা এবারের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তাদের কাউকেই ভোটাররা চিনেন না। তাই তাদেরকে মূল্যবান ভোট প্রদানেও অপরাগতা প্রকাশ করেন। তাছাড়া বিএনপি ও পাহাড়ের আঞ্চলিক দল গুলো থেকে শক্ত কোনো প্রতিপক্ষ নির্বাচনে অংশ না নেয়ায় উত্তাপহীন নির্বাচনও মনে করছেন কেউ। তবে নির্বাচনে আওয়ামীলীগের মনোনীত নৌকার প্রার্থী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরাকে তৃতীয়বারের মতো বিজয়ী করতে মাঠ চশে বেড়াচ্ছেন উপজেলা আওয়ামীলীগ ও সকল সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। তৃণমূল বিএনপি থেকে সোনালী আশ প্রতীক নিয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়া উশেপ্রু মারমা মুঠোফোনে জানান, মানিকছড়ি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে লিফলেট বিতরণ, প্রচার-প্রচারণা নিয়মিত চলছে। এখন পর্যন্ত এখানকার পরিবেশ ভালো। কোনো রকম বাধা বিঘœ ছাড়াই এখন পর্যন্ত প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। তবে কোনো প্রকার সহিংসতা না হলে তিনিও জয়ের ব্যাপারে শতভাগ জয়ে নিশ্চিত বলে জানান। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের মনোনীত নৌকার প্রার্থীকে মানিকছড়ি থেকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করার প্রত্যাশা ব্যক্ত করে উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক ও নির্বাচনী পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব মো. মাঈন উদ্দিন বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকারের আমলে সমতলের ন্যায় পার্বত্যঞ্চলেও ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। আর উন্নয়নের এ ধারা অব্যহত রাখতে এবং স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীককে বিজয়ী করতে উপজেলা সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের নিয়ে তৃণমূল পর্যায়ে লিফলেট বিতরণ, উঠান বৈঠক ও পথসভা করে যাচ্ছি। যাতে ভোটাররা নির্বিগ্নে আগামী ৭ জানুয়ারি স্বতঃফুর্তভাবে ভোট কেন্দ্রে এসে ভোট দিতে পারে। আশ করছি আমাদের নৌকার মনোনীত প্রার্থী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা বিপুল ভোটে তৃতীয়বারের মতো নির্বাচিত হবে। জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে কাজ করা উপজেলা সাধারণ সম্পাদক মো. জুলহাস উদ্দিন বলেন, জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে আমরাও প্রচার- প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি। প্রশাসন যদি ভোটার উপস্থিতি নিশ্চিত করতে পারে তাহলে তাহলে লাঙ্গল প্রতীকে বিপুল ভোটে জয় লাভ করবে। তবে এখন পর্যন্ত প্রচার- প্রচারণায় কোনো প্রকার বাধার সম্মখিন হননি বলেও তিনি জানিয়েছেন। তবে ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) আম প্রতীকের সমর্থনে প্রতিদিন রামগড় থেকে এসে নির্বাচনীর প্রচারণার দায়িত্বে থাকা মো. ইমান হোসেন বলেন, এখন পর্যন্ত নির্বাচনের পরিবেশ সুষ্ঠ রয়েছে। প্রতিদিন প্রত্যন্ত জনপদের বিভিন্ন এলাকায় নির্বাচনী লিফলেট বিতরণ ও প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি। আগামী ৭ তারিখ পর্যন্ত নির্বাচনের এমন সুষ্ঠ পরিবেশ থাকলে জয়ের ব্যাপারে তারাও আশাবাদি। উল্লেখ্য যে, মানিকছড়ি উপজেলায় ২৭ হাজার ২৪৫ জন পুরুষ ও ২৬ হাজার ৯৩৪ জন মহিলাসহ মোট ভোটার সংখ্যা ৫৪ হাজার ১৭৯ জন। চারটি ইউনিয়নে মোট ২০ ভোট কেন্দ্র রয়েছে। জনগণের স্বতঃফূর্ত অংশগ্রহণে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনী পরিবেশ নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কঠোর অবস্থানে থাকবে বলে জানিয়েছেন সহকারি রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দা সাদিয়া নূরীয়া।

অংগ্য মারমা,মানিকছড়ি (খাগড়াছড়ি) প্রতিনিধি

মন্তব্য করুন হিসাবে:

মন্তব্য করুন (0)