বায়ু দূষণে ধুকছে দেশ কমছে মানুষের গড়আয়ু

Generic placeholder image
  Ashfak

রাজধানী ঢাকা মরার ওপর খাড়ার ঘা হিসেবে যেন চেপে বসেছে বায়ু দূষণ। বায়ু দূষণের কারণে বাড়ছে ফুস-ফুসজনিতো রোগসহ নানা ধরনের রোগবালাই। কমছে মানুষের গড় আয়ু। অন্যদিকে বায়ুদূষণের প্রতিরোধ দৃশ্যমান ও কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ গ্রহণে উদাসীনতা একেবারেই স্পষ্ট। বায়ুদূষণে রোধ করতে হলে এর অন্যতম উৎসগুলো বন্ধ করার ক্ষেত্রে জোর দিয়েছেন পরিবেশবিদ ও পরিবেশবাদিরা। বিশ্বের ১০০ টি শহরের মধ্যে বায়ুদূষণে ঢাকা অবস্থা চতুর্থ। জাতীয় ও আর্ন্তজাতিক মানদ-ে বায়ুদূষণ : আইকিউএয়ারের এই তালিকায় বলা হয়েছে ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই (পিএম ২.৫) দূষনের অন্যতম উৎস। যা বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মানদ-ের চেয়ে ২১ গুণের বেশি। বাতাসের এই মানদ- পরিমাপ করে ঘরের বাইরে বের হলে মাস্ক ব্যবহারেরও পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে। সুইজারল্যান্ডভিত্তিক এই প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার নিয়মিত বায়ুদূষণের পরিস্থিতি তুলে ধরে থাকে। এই তালিকায় দূষিত বায়ুর শহরগুলোর মধ্যে বেশিরভাগ সময়ই প্রথম ও দ্বিতীয় স্থান দখল করে থাকে ভারতের দিল্লি এবং পাকিস্থানের লাহোর। পরিবেশ অধিদপ্তরের সবশেষ দেওয়া তথ্যমতে গত ১৪ নভেম্বর বায়ুদূসণে ঢাকার অবস্থান ছিলো ১৭২। সেদিন ২৪৩ স্কোর নিযে বায়ুদুষনের শীর্ষে ছিলো নারায়গঞ্জ। গত ৭ই নভেম্বর সব ছাড়িয়ে ৩১২ স্কোরে পৌছেছিল নারায়গঞ্জ যা সবচেয়ে অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ঢাকার বাইরে গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, রাজশাহী ও চট্টগ্রামেও বায়ুদূষণের মাত্রা বেশি। রাজধানীতে চলতি বছরের বায়ুদূষণ অতীতের সব রেকর্ড ভেঙেছে বলে জানিয়েছে, বেসরকারি বিশ^বিদ্যালয় স্ট্যামফোর্ডের পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের বায়ুম-লীয় দূষণ অধ্যায় কেন্দ্র (ক্যাপস)। ক্যাপসের গবেষকদের মতে, ২০২৩ সাল হতে পারে সবচেয়ে দুষিত বছর। একই সঙ্গে বিগত আট বছরের মধ্যে চলতি বছরের প্রথম ১০ মাসে (জানুয়ারি-অক্টোবর) গড়ে প্রায় ১৭.৯৩ শতাংশ বেশি। এদিকে চলতি বছরের আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো বিশ^বিদ্যালয় থেকে প্রকাশিত এক বৈশি^ক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বায়ুদূষণের কারণে বছরে বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু প্রায় ৭ বছর কমে যাচ্ছে। বায়ুদূষণ নিয়ে বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য : বিশেষজ্ঞদেও মতে নির্মাণ কাজের সামগ্রীঢেকে না রাখা, বর্জ্য অব্যবস্থাপনা, পরিবহন ও ইটভাটার অ-ব্যবস্থাপনাই বায়ুদূষণের অন্যতম কারণ। স্ট্যামফোর্ড বায়ুম-লীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রে (ক্যাপস) প্রতিষ্ঠানের ও চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, বায়ুদূষন বাংলাদেশের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। ঢাকায নির্মাণকাজ, রাস্তা খোড়াখুড়ি, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, বর্জ্য পোড়ানো এবং ইটভাটার কারণে বায়ুদূষণের মাত্রা দিন দিন বেড়েই চলছে বলে জানান এই গবেষক। পরিবেশ বাচাও আন্দোলনের (পবা) চেয়ারম্যান আবু নাসের খান বলেন, ফিটনেস বিহীন যানবাহনের ডিজেল বা পেট্টোলগুলোও অত্যন্ত নিম্মমানের। ছোট যানের সংখ্যা বেড়ে যাওয়াও বায়ুদূষণের জন্য দায়ী। কারণ যানের সংখ্যা যত বাড়বে ততই দূষণ বাড়বে। ইটের ভাটাগুলোতেও অতিরিক্ত সালফারযুক্ত কয়লাসহ নি¤œমানের জ¦ালানি ব্যবহৃত হচ্ছে। ঢাকার বায়ুদূষণকে দুটি পর্বে ভাগ করে নগর পরিকল্পনা বিশেষজ্ঞ ইকবাল হাবিব একটি বহির্দেশীয় দূষণ অন্যটি অভ্যন্তরীণ।

মৃণাল চৌধুরী সৈকত

মন্তব্য করুন হিসাবে:

মন্তব্য করুন (0)