ফরিদপুরে চাঞ্চল্যকর ইউপি চেয়ারম্যান হত্যা মামলার সাজাপ্রাপ্ত ২ আসামি আটক

Generic placeholder image
  Ashfak

ফরিদপুর জেলার সালথা উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মলয় বোসকে নৃশংসভাবে হত্যা মামলায় মৃত্যুদন্ড ও যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত দুই আসামি দীর্ঘ ১১ বছর পর আটক করেছে র‌্যাব-১০।গ্রেফতারকৃত আসামিরা হলেন সালথা উপজেলার গোয়ালপাড়া গ্রামের সামচু শেখের ছেলে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামি মনিরুজ্জামান শেখ ওরফে মনির (২৮) এবং একই উপজেলার খাগৈর গ্রামের কাশেম মোল্লার ছেলে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত সত্তার মোল্লা (২৫)।
আজ  শুক্রবার সকাল ১১ টার দিকে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানায় র‌্যাব-১০ ফরিদপুর ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার কে. এম. শাইখ আকতার।
সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‍্যাব-১০ এর একটি আভিযানিক দল গতকাল  বৃহস্পতিবার আনুমানিক রাত সাড়ে ৮ টার দিকে ও আনুমানিক রাত ১ টার দিকে নারায়ণগঞ্জ জেলার রুপগঞ্জ ও সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে চাঞ্চল্যকর ফরিদপুর জেলার সালথা উপজেলার আটঘর ইউপি চেয়ারম্যান মলয় বোসকে নৃশংসভাবে হত্যা মামলায় মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি মনিরুজ্জামান শেখ ওরফে মনির ও একই মামলায় যাবজ্জীবন  সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি সত্তার মোল্লাকে আটক করা হয়।প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামিরা উক্ত হত্যাকান্ডের সাথে তাদের সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে।
জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায় যে, ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ফরিদপুর জেলার সালথা উপজেলার আটঘর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মলয় বোস এর সাথে মনির ও সত্তারসহ তাদের দলের বেশ কয়েকজনের বিবাধের সৃষ্টি হয়।

উক্ত বিবাদ কে কেন্দ্র করে মনির ও সত্তারসহ তাদের দলের আরো ২০-২৫ মিলে মলয় বোসকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরবর্তীতে ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের ৭ তারিখে মলয় বোস নিজস্ব মোটরসাইকেলযোগে ইউনিয়নে যাওয়ার উদ্দেশ্যে তার বাসা থেকে বের হয়।

তার কিছুক্ষণ পর আনুমানিক সকাল ১১ টার দিকে ফরিদপুর জেলার কোতয়ালী থানাধীন রনকাইল গ্রামের নিটকস্থ একটি পাকা রাস্তার উপর পৌছাইলে আগে থেকেই ওৎ পেতে থাকা মনির ও সত্তারসহ তাদের দলের আরো ২০-২৫ জন লোক পূর্ব শত্রুতার জের ধরে পূর্বপরিকল্পিতভাবে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র (রাম দা, ছ্যান দা, চাপাতি, লোহার রড, লাঠি ইত্যাদি) নিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে মলয় বোস এর উপর আক্রমন করে।

অতঃপর মলয় বোস এর মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে দা, চাপাতি ইত্যাদি দিয়ে এলোপাতারি কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।

পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজন পুলিশকে সংবাদ দিলে কোতয়ালী থানা পুলিশ মলয় বোস এর মৃতদেহের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে লাশ ময়না তদন্তের জন্য স্থানীয় হাসপাতলের মর্গে প্রেরণ করে।

নৃশংস এই হত্যাকাণ্ড দেশব্যাপী পত্রপত্রিকা,টিভি মিডিয়া সহ সর্বত্র ব্যাপক আলোচিত হয় চাঞ্চল্যকর অবস্থা সৃষ্টি করে।

উক্ত হত্যাকান্ডের পর মৃত ইউপি চেয়ারম্যান মলয় বোস এর স্ত্রী ববিতা বোস বাদি হয়ে ফরিদপুর জেলার কোতয়ালী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

যার মামলা নং-০৯, তারিখ-০৯/০২/২০১২ খ্রিঃ, ধারা-১৪৩/ ৩৪১/ ৩২৩/৩ ২৬/ ৩০৭/৩০২/১১৪/৩৪ দন্ড বিধি।
ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি

পরবর্তীতে ঢাকার ৪ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল এই মামলার ৯ জন আসামীকে মৃত্যুদণ্ড ও ১২ জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের আদেশ প্রদান করে।

র‍্যাব-১০, সিপিসি-৩ এর কোম্পানী অধিনায়ক কমান্ডার কে. এম শাইখ আকতার আরো জানান, গ্রেফতারকৃত মনির ও সত্তার উক্ত হত্যাকান্ডের পর থেকে নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন ছদ্মবেশ ধারণ করে আত্মগোপন করে ছিল।

উক্ত আসামীদের আইনের আওতায় আনতে র‍্যাব ১০ (ফরিদপুর ক্যাম্প) কাজ শুরু করে ও দীর্ঘ প্রায় এক যুগ পর আসামী মনিরুজ্জামান ও সাত্তার মোল্ল্যাকে নারায়ণগঞ্জ এর রুপগঞ্জ ও সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। গ্রেফতারকৃত আসামিদেরকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
 

মন্তব্য করুন হিসাবে:

মন্তব্য করুন (0)