"আপনারা আমার মাকে বাঁচান"মায়ের ক্যান্সারের চিকিৎসার টাকার জন্য ছেলের আবেদন 

Generic placeholder image
  Ashfak

একসময় কাঁথা সেলাই করে ভ্যানচালক স্বামীর সংসারে বাড়তি জোগান দিতেন।তিনি স্বপ্ন দেখতেন যে প্রতিটি মানুষের মতো শূন্য থেকে আস্তে আস্তে উপরে উঠতে হয়। কিন্তু সেই লক্ষ্যে উঠতে গিয়ে কেউ কেউ বাধায় আটকা পড়ে মাঝ রাস্তায়। চারপাশে কত মানুষকে আমরা দেখি জীবনযুদ্ধে থমকে যেতে। এমনই একজন নারী মাদারীপুর সদর উপজেলা উত্তর হোগলপাতিয়া গ্রামের ৭নং ওয়ার্ডের কামাল হাওলাদারের স্ত্রী নাসিমা বেগম(৩৫)।
কামাল ও নাসিমা দম্পতির ঘরে দুই ছেলে 
মেহেরাজ হোসেন বিজয় (১৮)ও
জিসান হোসেন( ১৩)।তাদের ছেলে সন্তানদের  নিয়ে স্বপ্ন দেখতেন নাসিমা।তাদের সন্তানেরা লেখাপড়া করে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হবে। কিন্তু ভাগ্যের উত্থান পড়াশোনা ছেড়ে দিয়ে অভাবের সংসার ও মায়ের চিকিৎসার টাকা জোগাড় করতে কাজে নামতে হয় ১৮ বছর বয়সী ছেলে বিজয়ের।এদিকে তাঁর চিকিৎসার খরচ মেটাতে হিমসিম খেতে হচ্ছে পুরো পরিবারকে। অভাবের সংসারে এই ব্যয়বহুল চিকিৎসার খরচ মেটানো একেবারেই অসম্ভব হয়ে পড়েছে। তাই নাসিমা বেগমের চিকিৎসায় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে অনুরোধ রইল সমাজের হৃদয়বানের প্রতি।

অসুস্থ নাসিমার পরিবার জানান, ২০২১ সালের জুলাই মাসে মঙ্গলবার রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় স্টক করেন নাসিমা।পরে তাকে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করলে ডাক্তার তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজে প্রেরন করেন। সেখানে কয়েকদিন চিকিৎসা নেওয়ার পরে সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরে আসেন।সুস্থতার তিন মাসের পরেই আবার মাথা ব্যাথা শুরু হলে সে স্মৃতিশক্তি হারিয়ে ফেলে।তারপর ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা জন্য নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।পরে হাসপাতালের ডাক্তার তাকে বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা করানোর কথা জানান। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার শেষে রিপোর্ট দেখে ডাক্তার জানায় তার মাথায় টিউমার হয়েছে।পরে টিউমার অপারেশন করার জন্য বাড়ি গিয়ে জমিজমা বিক্রি করে টাকা সংগ্রহ করে ঢাকায় গিয়ে অপারেশন করিয়ে বাড়িতে ফেরার কয়েক মাস যেতে না যেতেই আবার মাথায় ব্যথা শুরু হয়। পুরনায় তাকে আবার ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরে ডাক্তার তাকে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখেন তার মাথায় রক্ত জমাট থেকে ক্যান্সারে রূপ নিয়েছে।এখন তার উন্নত চিকিৎসার ও রেডিওথেরাপির জন্য অনেক টাকা প্রয়োজন।তাই আমরা সরকার এবং বিত্তবান লোকের কাছে আবেদন।তাকে সাহায্য সহযোগিতা করা জন্য।

অসুস্থ নাসিমা জানান, রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় স্টক কারার পরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে যায়।সেখানে কয়েকদিন চিকিৎসা নিয়ে একটু সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে আসলে। হঠাৎ কয়েকমাস পরে মাথা ব্যাথা শুরু হয়।পরে ডাক্তারের কাছে গেলে ডাক্তার বলে মাথায় টিউমার হয়েছে।টিউমার অপারেশন করার পরে  ডাক্তার তাকে জানান তার মাথায় রক্ত জমাট থেকে ক্যান্সার হয়েছে।ডাক্তার বলেছে নিয়মিত রেডিওথেরাপি এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিলে সুস্থ হওয়া যাবে।আমার স্বামী ভ্যান চালায় তার দিন আনতে দিন খাইতে কষ্ট হয়ে যায়। এতো কয়েকদিন আমাকে চিকিৎসা করাতে জমিজমা বসতঘর বিক্রি করতে হয়েছে।এখন আর চিকিৎসা করার মতো এই সমর্থক আমাদের নাই। ভ্যান চালিয়ে যা পায় তা দিয়ে কি চাউল কিনবে না ঔষধ আনবে। আপনারা আমাকে সাহায্য সহযোগিতা করলে আল্লাহর রহমতে আমি বাচতে পারবো।আর তা না হলে আমি মরে যাবো। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি তো আমাদের মা আল্লাহ তার বান্দাকে উছিলায় বাচায়।আমার উছিলা আপনি।আমি আপনার সাহায্য পেলে বাচতে পারবো মা।

স্থানীয় কামাল মাতুব্বর বলেন, আমরা গরিব মানুষ, যতটুকু পেরেছি সহযোগিতা করেছি। তাদের যে অবস্থা ঠিকমতো খেতেই পারছে না। সরকার এবং বিত্তবানরা যদি তার দিকে একটু সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় তাহলে সে সুস্থ হয়ে আবার কাজ করতে পারবে। 

অসুস্থ নাসিমার স্বামী কামাল হাওলাদার জানান,টাকা অভাবে তাকে আর চিকিৎসা করাইতে আর পারছি না।আমার যতোটুকু ছিলো সব ব্যয় করেছি। এখন আর পারছি না।তাই  তাকে আমি ঢাকা থেকে বাড়িতে নিয়ে এসেছি।তাই সরকার ও ধনী লোকজনে কাছে একটা দাবি আমাকে একটু আর্থিক সাহায্য সহযোগিতা করার জন্য। তাহলে আমি তাকে আপনাদের সহযোগিতায়  জন্য আল্লাহই বাচাইবে।


অসুস্থ নাসিমার ছেলে জিহাদ হোসেন বলেন, আপনার আমার মাকে বাঁচান। আমরা গরীব মানুষ আমাদের টাকা-পয়সা নাই। আপনারা টাকা পয়সা দিলে আমার মা বাঁচতে পারবে। 

তাসলিমা বেগম বলেন,টাকা জন্য নাসিমাকে চিকিৎসা করতে পারছে না।মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার আপনার কছে আবেদন এই অসহায় গরিব নাসিমাকে চিকিৎসার সাহায্য সহযোগিতা। 

 নাসিমার বোন রানু বেগম বলেন,আপনাদের কাছে আমার বোনের জন্য সাহায্য সহযোগিতা চাই। আমাদের যা কিছু ছিলো সব কিছু ব্যয় করেছি। আর আমাদের কিছুই নেই।তাই আপনারা তাকে সাহায্য সহযোগিতা করলে সে বাচতে পারবে। 
 
ঝাউদি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ ফিরোজ মুন্সী বলেন,বিষয়টি আপনাদের কাছ থেকে শুনেছি। তাকে অবশ্যই সাহায্য সহযোগিতা করা হবে। 
ঝাউদি ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ লোকমান বেপারী বলেন,তাকে আমাদের ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সকল প্রকার সহায়তা দেওয়া হবে।


ঝাউদি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য সামছুল হক ফকির বলেন, আমরা যতটুকু পেরেছি সাহায্য করেছি। অসুস্থ নাসিমা বেগমকে সহযোগিতা করার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।

মাদারীপুর সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক ফেরদাউসি আক্তার বলেন, আবেদন করলে সরকারি বরাদ্দ অনুযায়ী তাকে সহযোগিতা করা হবে।


মাদারীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাইনউদ্দীন বলেন, নাসিমা বেগম আমাদের কাছে আবেদন করলে আমরা সমাজ সেবা অধিদপ্তর ও পরিবার পরিকল্পনা মাধ্যমে তাকে সাহায্য করা যেতে পারে। 

রাকিব হাসান,মাদারীপুর 

মন্তব্য করুন হিসাবে:

মন্তব্য করুন (0)