প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরে তালা, থাকে না অধিকাংশ বরাদ্দপ্রাপ্তরা 

Generic placeholder image
  Ashfak

 মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের পাকা ঘরে রয়েছে বিদ্যুৎ,পানিসহ বিভিন্ন সুবিধা। তবুও আশ্রয়ণ প্রকল্পের এসব ঘরে থাকছেন না বেশিরভাগ সুবিধাভোগীরা। দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় প্রায় দেড় শতাধিক ঘরে ঝুলছে তালা। তবে বরাদ্দ পাওয়ার পরও যারা এসব ঘরে থাকছেন না, তাদের বরাদ্দ বাতিল করে নতুনদের বরাদ্দ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।

সরেজমিনে, উপজেলার ১নং আলোকঝাড়ী ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া, খেয়াঘাট, হলদিপাড়া ও গোবিন্দপুর খানসামা ভিলেজ ঘুরে দেখা গেছে প্রায় ৮০ টিরও বেশি ঘরে রয়েছে তালা। 
৩নং আঙ্গারপাড়া ইউনিয়নের ছাতিয়ানগড় গ্রামের কৈ পাড়া নামক এলাকায় প্রধানমন্ত্রীর উপহারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ২০ টি ঘরের মধ্যে ৯ টি ঘরে বসবাস করে লোকজন আর বাকি ১১ টি ঘরে ঝুলছে তালা, ঘরের সামনে বারান্দায় শুকানো হচ্ছে এখন গোবর ও খড়কুট।
নিউ পাকেরহাট এলাকার আশ্রয়ণ প্রকল্পের ২০ টি ঘরের মধ্যে ৭ টি ঘরে বসবাস করে লোকজন আর বাকি ১৩ টি ঘরে ঝুলছে তালা।
২নং ভেড়ভেড়ি ইউনিয়নের আরজী জাহাঙ্গীরপুর এলাকার আশ্রয়ন প্রকল্পে ৫৫ টি ঘর থাকলেও ৩৫ টি  ঘরে বসবাস লোকজন আর বাকি ২০ টি ঘরে রয়েছে তালা। একই চিত্র ৪নং খামারপাড়া,৫নং ভাবকী ও ৬নং গোয়ালডিহি ইউনিয়নের আশ্রয়ন প্রকল্প ঘুরে দেখা গেছে। 

আশ্রয়ণ প্রকল্পের বসবাসকারীরা জানান, যারা চলে গেছেন তাদের কম-বেশি জমিজমা আছে। এ ছাড়াও এখানে কাজকর্ম করার মতো সুযোগ-সুবিধাও নেই। যারা চলে গেছেন তারা ওইখানে কিছুদিন থেকে ঘর অন্যের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন। অনেকেই সুযোগ গ্রহণের জন্য প্রথমে ঘরে ওঠেন। কিন্তু ওই ঘর বিক্রির কোনো সুযোগ না থাকায় পরে তারা ঘর ছেড়ে চলে গেছেন। আবার কেউ কেউ মাঝে মধ্যে এসে দেখে যায়। তারা বলেন, ঘর দেয়ার সময় হয়তো যাচাই-বাছাইয়ের কিছু সমস্যা ছিল। 
স্থানীয়দের অনেকের অভিযোগ, অসহায় ভূমিহীনদের ঘর না দিয়ে বিত্তবানদের বাড়িগুলো দেওয়া হয়েছে। তাই তারা নিজ বাড়ি রেখে উপহারের ঘরে বসবাস করছেন না। তাই তারা এসব ঘর শুধু দখলে রেখেছেন মাত্র। এই এলাকাতেই ভূমিহীন অনেকে আছে। তারা আরও বলেন,যারা ঘরে তালা লাগিয়ে চলে গেছে তারা সরকারি দেওয়া টিউবওয়েল গুলোও খুলে ঘরের ভিতর তালাবদ্ধ করে রেখেছেন। স্থানীয়দের দাবি, আশ্রয়ন প্রকল্পে যারা ঘরে নিয়ে বসবাস করে না । তাদের পরিবর্তিতে এলাকায় আরও অনেক ভূমিহীন ও দরিদ্র লোকজন রয়েছে। তাদেরকে ওই ঘরগুলো মালিকের পরিবর্তন করে দিয়ে নতুন প্রকৃত দরিদ্র ও ভূমিহীনদের দেওয়ার জন্য।
এ বিষয়ে মুঠোফোনে উপ‌জেলা সহকারী ক‌মিশনার (ভূ‌মি) মারুফ হাসানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জানায়, ইতোমধ্যে বরাদ্দ পাওয়‌া ঘ‌রের উপকার ভোগীদের বিষ‌য়ে তথ‌্য নেওয়া হ‌য়ে‌ছে। যেসকল ঘরে তালা ঝুলছে পরবর্তীতে সেই সমস্ত ঘরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তালা লাগিয়ে দেওয়া হবে এবং পরবর্তীতে যদি কোন ভূর্মিহীন ব্যক্তি পাওয়া যায় তখন সেগুলো তাদের মাঝে বুঝিয়ে দেওয়া হবে।

এ বিষয়ে খানসামা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাশিদা আক্তার বলেন,  বরাদ্দ পাওয়া ঘরের উপকারভোগীদের বিষয়ে তথ্য নেওয়া হয়েছে। যারা ঘরগুলোতে থাকছেন না তাদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে কী কারণে তারা থাকছেন না। বরাদ্দ পাওয়ার পরও যারা থাকছেন না, তাদের বরাদ্দ বাতিল করে নতুনদের বরাদ্দ দেওয়া হবে।
এছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন অভিযোগ।
মো. আজিজার রহমান, দিনাজপুর প্রতিনিধি

মন্তব্য করুন হিসাবে:

মন্তব্য করুন (0)